তোমাদের বিয়ে হল ফাগুনের চৌঠা, অক্ষয় হয়ে থাক্ সিঁদুরের কৌটা। সাত চড়ে তবু যেন কথা মুখে না ফোটে, নাসিকার ডগা ছেড়ে ঘোমটাও না ওঠে; শাশুড়ি না বলে যেন "কী বেহায়া বৌটা'। "পাক প্রণালী'র মতে কোরো তুমি রন্ধন, জেনো ইহা প্রণয়ের সব-সেরা বন্ধন। চামড়ার মতো যেন না দেখায় লুচিটা, স্বরচিত ব'লে দাবি নাহি করে মুচিটা; পাতে বসে পতি যেন নাহি করে ক্রন্দন। যা-ই কেন বলুক-না প্রতিবেশী নিন্দুক খুব ক'ষে আঁটা যেন থাকে তব সিন্দুক। বন্ধুরা ধার চায়, দাম চায় দোকানি, চাকর-বাকর চায় মাসহারা-চোকানি-- ত্রিভুবনে এই আছে অতি বড়ো তিন দুখ। বই-কেনা শখটারে দিয়ো নাকো প্রশ্রয়; ধার নিয়ে ফিরিয়ো না, তাতে নাহি দোষ রয়। বোঝ আর না-ই বোঝ কাছে রেখো গীতাটি, মাঝে মাঝে উলটিয়ো মনুসংহিতাটি; "স্ত্রী স্বামীর ছায়াসম' মনে যেন হোঁশ রয়। যদি কোনো শুভদিনে ভর্তা না ভর্ৎসে, বেশি ব্যয় হয় পড়ে পাকা রুই মৎস্যে, কালিয়ার সৌরভে প্রাণ যবে উতলায়, ভোজনে দুজনে শুধু বসিবে কি দু'তলায়। লোভী এ কবির নাম মনে রেখো, বৎসে। দ্রুত উন্নতিবেগে স্বামীর অদৃষ্ট দারোগাগিরিতে এসে শেষে পাক্ ইষ্ট। বহু পুণ্যের ফল যদি তার থাকে রে, রায়বাহাদুর-খ্যাতি পাবে তবে আখেরে; তার পরে আরো কী বা রবে অবশিষ্ট।
THE NEWS OF my love is abroad among the spring flowers. It brings to my mind the old songs. My heart of a sudden has put on green leaves of desire. My love came not but her touch is on my hair, and her voice comes across the fragrant fields in murmurs of April. Her gaze is here in the sky, but where are her eyes? Her kisses are in the air, but where are her lips?
আজ এই বাদলার দিন, এ মেঘদূতের দিন নয়। এ দিন অচলতায় বাঁধা। মেঘ চলছে না, চলছে না হাওয়া, টিপিটিপি বৃষ্টি ঘোমটার মতো পড়ে আছে দিনের মুখের উপর। সময়ে যেন স্রোত নেই, চার দিকে অবারিত আকাশ, অচঞ্চল অবসর। যেদিন মেঘদূত লিখেছেন কবি সেদিন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে নীল পাহাড়ের গায়ে। দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছুটেছে মেঘ, পুবে হাওয়া বয়েছে শ্যামজম্বুবনান্তকে দুলিয়ে দিয়ে। যক্ষনারী বলে উঠেছে, মা গো, পাহাড়সুদ্ধ নিল বুঝি উড়িয়ে। মেঘদূতে উড়ে চলে যাওয়ার বিরহ, দুঃখের ভার পড়ল না তার 'পরে-- সেই বিরহে ব্যথার উপর মুক্তি হয়েছে জয়ী। সেদিনকার পৃথিবী জেগে উঠেছিল উচ্ছল ঝরনায়, উদ্বেল নদীস্রোতে, মুখরিত বনহিল্লোলে, তার সঙ্গে দুলে দুলে উঠেছে মন্দাক্রান্তা ছন্দে বিরহীর বাণী। একদা যখন মিলনে ছিল না বাধা তখন ব্যবধান ছিল সমস্ত বিশ্বে, বিচিত্র পৃথিবীর বেষ্টনী পড়ে থাকত নিভৃত বাসরকক্ষের বাইরে। যেদিন এল বিচ্ছেদ সেদিন বাঁধন-ছাড়া দুঃখ বেরোল নদী গিরি অরণ্যের উপর দিয়ে। কোণের কান্না মিলিয়ে গেল পথের উল্লাসে। অবশেষে ব্যথার রূপ দেখা গেল যে কৈলাসে যাত্রা হল শেষ! সেখানে অচল ঐশ্বর্যের মাঝখানে প্রতীক্ষার নিশ্চল বেদনা। অপূর্ণ যখন চলেছে পূর্ণের দিকে তার বিচ্ছেদের যাত্রাপথে আনন্দের নব নব পর্যায়। পরিপূর্ণ অপেক্ষা করছে স্থির হয়ে; নিত্যপুষ্প, নিত্যচন্দ্রালোক, নিত্যই সে একা-- সেই তো একান্ত বিরহী। যে অভিসারিকা তারই জয়, আনন্দে সে চলেছে কাঁটা মাড়িয়ে। ভুল বলা হল বুঝি। সেও তো নেই স্থির হয়ে যে পরিপূর্ণ, সে যে বাজায় বাঁশি, প্রতীক্ষার বাঁশি-- সুর তার এগিয়ে চলে অন্ধকার পথে। বাঞ্ছিতের আহ্বান আর অভিসারিকার চলা পদে পদে মিলেছে একই তালে। তাই নদী চলেছে যাত্রার ছন্দে, সমুদ্র দুলেছে আহ্বানের সুরে।